ডেস্ক নিউজ:
মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য ৪৭৫ টন ত্রাণ পাঠায় মালয়েশিয়া সরকার। এই প্রোগ্রামের নাম দেওয়া হয় ফুড ফ্রুটিলা। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে এই ত্রাণ বিতরণের দায়িত্ব পায় বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি (বিডিআরসি)। ২৭ দিনে এই ত্রাণ বিতরণ করা হয়। ফুড ফ্রুটিলার ত্রাণ বিতরণে মাত্র ১০ লাখ টাকা খরচ হলেও ২৫ লাখ টাকা ভুয়া বিল করে সদর দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। বাকি ১৫ লাখ টাকা আত্মসাতের পায়তারা শুরু করেছে সেলিম-নাজমুল সিন্ডিকেট।
জানা গেছে, ফুড ফ্রুটিলার ত্রাণ বিতরণের সমন্বয়ক ছিল বিডিআরসির কর্মকর্তা সেলিম আহমেদ। ওই ত্রাণ গুলো বিতরণে খরচ হয়েছে ১০ লাখ টাকা। কিন্তু সেখানে ত্রাণ বিতরণে ভুয়া খরচ বিল করা হয়েছে ২৫ লাখ টাকা। বাকি ১৫ লাখ টাকা ভুয়া বিল করে হাতিয়ে নেওয়ার পায়তারা করছে সেলিম সিন্ডিকেট। আর তাঁর এই দুর্নীতিতে সরাসরি ইন্ধন দিচ্ছে বিডিআরসির সদর দপ্তরের রিলিফ বিভাগের পরিচালক নাজমুল আজম খান।
জানা গেছে, ফুড ফ্রুটিলার ত্রাণ বিতরণের সময় বিডিআরসির কর্মকর্তারা কক্সবাজার থেকে রোহিঙ্গা ক্যাম্প যাতায়াতের জন্য দুইটি মাইক্রোবাস ভাড়া নেয়। প্রতিটি মাইক্রোবাস দৈনিক ৪ হাজার টাকা করে ২৭ দিনে দুই মাইক্রোবাসের বিল আসে ২ লাখ ১৬ হাজার টাকা। লোডিং খরচ ধরা হয়েছে প্রতি টন ৭০ টাকা করে ৩৩ হাজার ২৫০ টাকা। আনলোডিং খরচ ধরা হয়েছে টন প্রতি ৮০ টাকা করে ২৮ হাজার টাকা। প্যাকেজিং মজুরি প্রতি প্যাকেট ১৪ টাকা করে ২ লাখ ২৪ হাজার টাকা। ট্রাক ভাড়া প্রতি টন ৩০০ টাকা করে ২৭ দিনে ১ লাখ ২৪ হাজার টাকা। প্রতি বস্তা ৯ টাকা করে ৪১ হাজার টাকা। অফিসার ভাতা জন প্রতি দৈনিক ১ হাজার টাকা করে চারজনের ভাতা ১ লাখ ৮ হাজার টাকা। আরসিওয়াই ভাতা ২ লাখ টাকা। পলিথিন বিল ৩০ হাজার টাকা। বিবিধ খরচ ধরা হয়েছে ১ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে প্রায় ১০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু রহস্যজনকভাবে টাকা আত্মসাতের জন্য বিল করা হয়েছে ২৫ লাখ টাকা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিডিআরসির এক কর্মকর্তা বলেন, সেলিম আহমেদ ফুড ফ্রুটিলা বিতরণের সময়ও রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে জনপ্রতি ১ হাজার টাকা করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এবার সেই ত্রাণ বিতরণে ভুয়া খরচ দেখিয়ে ১৫ লাখ টাকা বেশি বিল করা হয়েছে। ওই টাকা গুলো হাতিয়ে নেওয়ার জন্য তৎপর হয়ে উঠেছে। তার এই অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
এবিষয়ে জানতে চাইলে সেলিম আহমেদ বলেন, বিলে খরচের যে অংক দেখানো হয়েছে; সেগুলো খরচ হয়েছে। ভুয়া বিলের তথ্যটি সঠিক নয় বলে দাবী করেন তিনি।
-দৈনিক সকালের কক্সবাজার